আত্মবিশ্বাস বা আত্মপ্রত্যয় এমন এক শক্তি, যা একজন মানুষকে সাফল্যের পথে নির্ভীকভাবে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। ইসলাম আমাদের শুধু আল্লাহর উপর ভরসা করতে বলে না, বরং নিজেকেও গঠন করতে শেখায় যেন সে দায়িত্ববান, দৃঢ়চেতা ও আত্মবিশ্বাসী একজন মুমিন হয়ে উঠতে পারে।
১. তাওক্কুল বা আল্লাহর উপর ভরসা:
আত্মবিশ্বাসের প্রথম ভিত্তি হলো এই বিশ্বাস—“আমার রিজিক, সম্মান ও ফলাফল আল্লাহর হাতে।”
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,
“وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ”
অর্থ: “যে আল্লাহর উপর ভরসা করে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট।” (সূরা তালাক: ৩)
২. নিজের সীমাবদ্ধতা ও শক্তি চেনা:
আত্মবিশ্বাসের জন্য দরকার নিজেকে জানা। হযরত উমর (রাঃ) বলতেন, “যে নিজেকে চিনে, সে তার রবকে চিনে।”
যখন ছাত্র জানে তার দুর্বলতা কোথায়, তখন সে সচেতনভাবে এগোতে পারে, ফলে সে সঠিক জায়গায় আত্মবিশ্বাস স্থাপন করতে শেখে।
৩. পরিশ্রম ও দোয়ার সমন্বয়:
ইসলামে কাজ ছাড়া শুধু আশা করা নিরাশা। রাসুল (ﷺ) উট বেঁধে তাওক্কুল করতে বলেছেন।
আমরা চেষ্টা করব, কষ্ট করব, পরিকল্পনা করব, তারপর বলব: “ইয়া আল্লাহ, তুমিই আমার জন্য যথেষ্ট।”
৪. নফসের নেতিবাচক কণ্ঠস্বরকে চ্যালেঞ্জ করা:
নফস সবসময় বলবে: “তুমি পারবে না”, “তুমি যোগ্য না।”
কিন্তু একজন মুমিন তার প্রতিউত্তর দেয়: “আল্লাহ আমার সাথে আছেন, আমি অবশ্যই পারব।”
এই বিশ্বাস জন্ম নেয় নামায, কুরআন তিলাওয়াত, ও আধ্যাত্মিক চর্চার মাধ্যমে।
৫. ইতিবাচক পরিবেশ গড়া:
আত্মবিশ্বাস তখনই গড়ে ওঠে যখন ছাত্র আশেপাশে পজিটিভ মানুষ ও শিক্ষকের সাহচর্যে থাকে। আল্লাহর রাসুল (ﷺ) সাহাবীদের মাঝে এমন পরিবেশ সৃষ্টি করেছিলেন যেখানে অল্প জ্ঞান থাকলেও সাহস ও আত্মবিশ্বাস ছিল আকাশচুম্বী।
৬. সফল সাহাবীদের জীবনী অধ্যয়ন:
হযরত বিলাল (রাঃ), যিনি ছিলেন ক্রীতদাস, তিনি সাহসিকতায় এমন উচ্চতায় পৌঁছান, যার কারণে ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন হিসেবে তিনি সম্মানিত হন।
শিক্ষা: ছোট পটভূমি কখনও বড় সাফল্যের বাঁধা নয়, যদি আত্মবিশ্বাস থাকে।
উপসংহার:
আত্মবিশ্বাস কৃত্রিমভাবে গড়ে ওঠে না, এটি আসে তাওক্কুল, আত্মবিশ্লেষণ, চেষ্টা এবং আল্লাহর নৈকট্যের মাধ্যমে।
দারসে নিযামী একাডেমির প্রতিটি ছাত্রকে শেখা উচিত—“তুমি ছোট নও, তোমার রব মহান। তাই আত্মবিশ্বাস রেখে এগিয়ে চলো।” আল্লাহর সাথে সম্পর্কই আত্মবিশ্বাসের সবচেয়ে বড় চাবিকাঠি।
মাশাআল্লাহ