ক্লাসে সক্রিয় অংশগ্রহণের ৫টি কৌশল

ক্লাসে সক্রিয় অংশগ্রহণের ৫টি কৌশল

ক্লাসে সক্রিয় অংশগ্রহণ শুধু ভালো ছাত্র হওয়ার জন্য নয়, বরং গভীরভাবে শেখার এবং ইলমে অগ্রগতি লাভের অন্যতম কার্যকর উপায়। অনেক শিক্ষার্থী ক্লাসে নিয়মিত উপস্থিত থাকলেও মনোযোগ বা অংশগ্রহণের অভাবে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পায় না। নিচে ক্লাসে সক্রিয় অংশগ্রহণের ৫টি কার্যকর কৌশল তুলে ধরা হলো—

১. প্রস্তুত হয়ে ক্লাসে আসা:

ক্লাসে সক্রিয় হতে হলে শুধু উপস্থিত থাকাই যথেষ্ট নয়, বরং পূর্ব প্রস্তুতি অত্যন্ত জরুরি। আগের ক্লাসে যা পড়ানো হয়েছে তা রিভিশন করে আসুন এবং পরবর্তী পাঠ সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত ধারণা নিয়ে আসুন। এতে ক্লাসের আলোচনা আপনার জন্য অনেক বেশি অর্থবহ ও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে।

২. সক্রিয় শ্রবণ ও মনোযোগ:

শুধু শিক্ষককে শোনা নয়, বরং মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করাই ‘সক্রিয় শ্রবণ’। যখন শিক্ষক ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, তখন অপ্রয়োজনীয় চিন্তা, মোবাইল ফোন বা আশপাশের কিছুর দিকে মন না দিয়ে সম্পূর্ণ মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখুন। প্রয়োজনমতো ছোট নোট নিন, মূল পয়েন্টগুলো দাগিয়ে রাখুন। এতে পাঠ বুঝতে ও মনে রাখতে সহজ হবে।

৩. প্রশ্ন করা ও মত প্রকাশ:

কোনো বিষয় ভালোভাবে না বোঝা গেলে শিক্ষককে বিনয়ের সঙ্গে প্রশ্ন করুন। এটি আপনাকে বোঝাপড়ায় সাহায্য করবে এবং অন্যদের মাঝেও সাহস জোগাবে। পাশাপাশি আপনি যদি কোনো ব্যাখ্যার সঙ্গে একমত না হন বা বাড়তি কিছু জানেন, তাহলে তা শেয়ার করুন। অবশ্যই শালীনতা ও সম্মানের সঙ্গে। এতে শিক্ষক বুঝবেন আপনি পড়ায় গভীর মনোযোগী।

৪. গ্রুপ ডিসকাশন ও সহযোগিতা:

শ্রেণিকক্ষে অন্য সহপাঠীদের সঙ্গে আলোচনা করা শেখাকে আরও কার্যকর করে তোলে। পড়া শেষে ৫-১০ মিনিটের সংক্ষিপ্ত আলোচনা বা মুরাজাআ ক্লাসের মূল বিষয়গুলো পরিষ্কার করে দেয়। আপনি কোনো একটি বিষয় বুঝিয়ে দিলে তা আপনার নিজের কাছেও আরও ভালোভাবে পরিষ্কার হয়।

৫. আত্মবিশ্বাস ও ইতিবাচক মনোভাব রাখা:

অনেক সময় ছাত্ররা মনে করে, “আমি যদি ভুল বলি?”, “লোকেরা হাসবে” ইত্যাদি। এই ভীতি দূর করুন। মনে রাখবেন, শেখার পথে ভুল করাই স্বাভাবিক। আপনি যদি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলেন এবং শেখার আগ্রহ দেখান, শিক্ষক ও সহপাঠীরাও আপনাকে উৎসাহ দেবেন। ইতিবাচক মনোভাবই আপনাকে ক্লাসে সক্রিয় ও সফল করে তুলবে।

উপসংহার:

ক্লাসে সক্রিয় অংশগ্রহণ শুধু একটি অভ্যাস নয়, এটি একটি আত্মিক-মানসিক প্রস্তুতির অংশ। আলেম হোন বা সাধারণ শিক্ষার্থী — এই কৌশলগুলো যে কেউ বাস্তবায়ন করলে পড়াশোনার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হবে, শেখার গতি বাড়বে এবং ফলাফলও হবে সন্তোষজনক। তাই আজ থেকেই এই কৌশলগুলো অনুশীলন করুন এবং নিজেকে একটি সচেতন ও সক্রিয় শিক্ষার্থী হিসেবে গড়ে তুলুন।

Tags: No tags

Leave A Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *